বাংলাদেশে এখন হিন্দুদের উপর আক্রমণ নেমে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর তার জেরে তেতে রয়েছে ওপার বাংলা। অনেকেই লুকিয়ে, গা–ঢাকা দিয়ে এপারে চলে আসার চেষ্টা করছেন। এই আবহে আওয়ামি লিগের ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যাবে না বলে সরব হলেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। শেখ হাসিনা এখন ভারতে আছেন। তাঁর দল আওয়ামি লিগের নেতাদের উপরও হামলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। সেখানে আর আওয়ামি লিগের নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনার শাসন মেনে নেওয়া হবে না বলেই জানিয়ে দিল গণঅধিকার পরিষদ।
গতকাল শুক্রবার মিরপুর ১০ সিটি কর্পোরেশন অফিসের কাছে ফকির বাড়ি লেনে এক আলোচনাসভা হয়। সেখানে জুলাই–অগস্টে ছাত্র জনতার গণআন্দোলনে আহতদের সুস্থতা কামনা এবং শহীদদের স্মরণ করা হয়। এই সভার আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদ, ঢাকা মহানগর উত্তর মিরপুর জোন। সেখানেই গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আওয়ামি লিগকে পুর্নবাসনের জন্য দেশি–বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। কেউ কেউ ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আঁতাত করে আওয়ামি লিগকে ফিরিয়ে আনার কথা বলছে। কিন্তু আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে কোনওরকম আপস চলবে না।’
আরও পড়ুন: রাজ্যের ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য, মিষ্টি সম্পর্কেই রাজ্যের প্রস্তাবে সিলমোহর বোসের
এই মন্তব্য যে সরাসরি সংঘাতের বার্তা বহন করছে সেটা এখন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। যার ফলে আওয়ামি লিগের সদস্যদের উপর আরও আক্রমণ নেমে আসতে পারে। তবে এই বিষয়ে নুরুল হক নুরের বক্তব্য, ‘ছাত্র জনতার আন্দোলনে আমরা নতুন দেশ পেয়েছি। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে আওয়ামি লিগ দেশকে ভারতের তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে কোনও আপস চলবে না। মনে রাখতে হবে পরাজিত শক্তি যেকোন সময় ফিরে আসতে পারে। তাই সজাগ থাকতে হবে। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের মিডিয়া পরিকল্পনা করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে হিন্দু ভাইদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে, নিপীড়ন হচ্ছে। এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচার আর হতে পারে না।’
এমন অশান্তির পরিবেশে ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতির মন্তব্য প্রভাব ফেলতে পারে। এখন ভারতকে নানাভাবে দায়ী করা হচ্ছে। এমনকী পড়শি দেশের বিরুদ্ধে কড়া অভিযোগ শানাতেও ছাড়ছেন না কেউ। ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনে হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আর তাই বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে নুরুল হকের কথায়, ‘শেখ হাসিনার জমানায় যে দানবীয় রাষ্ট্র গড়ে উঠেছিল তার পরিবর্তনের জন্য ছাত্র জনতা জীবন দিয়েছিল। রাতারাতি নির্বাচন হলে এমন পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না। আমরা এই সরকারকে সময় দিতে চাই।’ আর গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন বললেন, ‘বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি দীর্ঘ ১৫ বছর ভারতের কাছে বর্গা দিয়েছিল শেখ হাসিনা। অগস্টে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়েছে। কিন্তু ভারত তার পুরনো বন্ধু শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে।’