পাহাড়ে আবার রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই বিজেপির ১০ জন বিধায়ক উত্তরবঙ্গ থেকে নয়াদিল্লি গিয়েছিলেন। উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের দাবিতে ছিল সেই সফর বলে খবর। আবার দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তাও ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে পাহাড় সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করতে বিজেপিকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল জিএনএলএফ। এই সময়সীমার মধ্যে সমাধান বেরিয়ে না এলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন জিএনএলএফের সভাপতি মন ঘিসিং। পাহাড়ের নানা এলাকায় কালো ঝান্ডা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানান মন। ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু পাহাড় সমস্যার সমাধানসূত্র এখনও অধরা। তবে আলোচনার রাস্তা খুলেছে বলে খুশি জিএনএলএফ।
২০২৬ সালে বিধানসভা নির্বাচন আছে। তার আগে তেমন বড় কিছু হবে বলে মনে করেন না অন্যান্য পাহাড়ি রাজনৈতিক দলগুলি। বিজেপি নানা চেষ্টা করে যাচ্ছে এটা বোঝাতে যে তারা পাহাড়ের এবং গোর্খাদের জন্য কিছু করতে চায়। অথচ গোর্খারা তা খুব একটা বিশ্বাস করতে নারাজ। এই আবহে হয়ে গিয়েছে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক। তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে কি মিলল সমাধানসূত্র? এই বিষয়ে মন ঘিসিং বলেন, ‘আলোচনার দরজা খুলেছে বলে আমরা কেন্দ্রীয় সরকার এবং এখানকার সাংসদের ভূমিকায় খুশি। সব কালো ঝান্ডা সরিয়ে নিয়েছি। আবার পাহাড়ে আমাদের দল জিএনএলএফের ঝান্ডা লাগছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই আবার বৈঠক হবে। আর সেখানেই সমাধানসূত্র বের হবে বলে আমরা আশাবাদী।’
আরও পড়ুন: ‘আপনাদের সার্ভিস ব্রেক হবে না’, চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়ে বড় বার্তা দিলেন মমতা
জিএনএলএফ তো খুশি। পাহাড়ের বাকি রাজনৈতিক দলগুলি কি খুশি? পাহাড়ের শাসকদল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এসব রাস্তা খোলার কথা মোটেই খুশি নয়। তারা স্থায়ী সমাধান হচ্ছে দেখতে চায়। তাই ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মার বক্তব্য, ‘বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনের আগে আবার জোটসঙ্গীদের বোকা বানানোর কাজ শুরু করেছে। এটা সবার বোঝা উচিত।’ আসলে বিজেপির জোট সঙ্গী হয়ে রয়েছে জিএনএলএফ। তাই বিজেপির দিকে ঝোল টানবে এটাই দস্তুর। এমন মনে করে পাহাড়ের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি।
স্থায়ী সমাধানের পথ খুলে যাওয়া এবং সমাধান হওয়া দুটোর মধ্যে অনেকটা পার্থক্য আছে। আর তাই জিএনএলএফের সঙ্গে অনেকেই একমত নন। বিজেপি আগেও বহু কথা বলেছিল। কিন্তু তা বাস্তবে দেখা যায়নি। যে জিএনএলএফ ২০২৫ সালের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারকে সময়সীমা দিয়েছিল তারাই এখন খুশি প্রকাশ করেছে। এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ডাক পেয়েই নয়াদিল্লিতে ছুটেছিলেন মন ঘিসিং। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে রাজু বিস্তার পাশে বসে বৈঠক করা এবং সাংবাদিক সম্মেলনও করেন মন ঘিসিং। সুতরাং বিজেপির পক্ষেই কথা বলবেন মন ঘিসিং এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এইসব কথা পাহাড়বাসীর মন গলাতে পারছে কি? সময় বলবে।