মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল, ২০২৫) কেবলমাত্র মেদিনীপুর শহরে যে উত্তেজনা দেখা গিয়েছিল, আজ (বুধবার - ৯ এপ্রিল, ২০২৫) সেই উত্তেজনার আঁচই সারা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চাকরি হারানোর প্রতিবাদে এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাব (চাকরিহারাদের ভলান্টিয়ারি শিক্ষকতা) প্রত্যাখ্যান করে মঙ্গলবারই মেদিনীপুরে একাধিক কর্মসূচি পালন করেন ২০১৬ সালের বাতিল হয়ে যাওয়া এসএসসি প্যানেলভুক্তরা। সব শেষে স্থানীয় ডিআই অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা।
সংবাদমাধ্যমে হাতে আসা তথ্য বলছে, আজ (বুধবার) রাজ্যের জেলায় জেলায় ওই একই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হবে। অর্থাৎ - জেলায় জেলায় ডিআই অফিসে তালা ঝুলিয়ে চাকরি যাওয়ার প্রতিবাদ জানাবেন ভুক্তভোগীরা।
ইতিমধ্য়েই 'যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ ২০১৬' ব্যানারের নীচে একজোট হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিহারা 'যোগ্য' প্রার্থীরা। গত সোমবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এই 'যোগ্য' প্রার্থীদের সঙ্গেই কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন - যোগ্য কারও চাকরি তিনি যেতে দেবেন না। তার জন্য আইন ও সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম অনুসারেই পদক্ষেপ করবে তাঁর সরকার।
সেই অনুসারে - ইতিমধ্য়েই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে এসএসসি কর্তৃপক্ষ (যদিও তারা স্বশাসিত সংস্থা)। অন্যদিকে - মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন মেনে একদল চাকরিহারা স্কুলে গিয়ে ভলান্টিয়ারি শিক্ষকতা করলেও সকলে সেই পথ মাড়াননি। অভিযোগ এমনও উঠেছে যে - মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তাবে সায় দিয়ে স্কুলে গেলেও চাকরিহারা সেই শিক্ষক, শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মী কিংবা অশিক্ষক কর্মচারীদের মূল রেজিস্টারে সই করতে দেওয়া হয়নি। তাঁদের উপস্থিতি নথিভুক্ত করা হয়েছে আলাদা রেজিস্টারে!
যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চে ২০১৬ - এর প্রতিনিধিরা বলছেন, এই ধরনের আচরণ অত্যন্ত অসম্মানজনক ও বেদনার। যাঁরা পরিশ্রম করে, নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। আজ তাঁরা এভাবে বৈষম্য ও লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন। যা মেনে নেওয়া যায় না।
সংশ্লিষ্ট মঞ্চের অধিকাংশ সদস্যেরই বক্তব্য হল - তাঁরা সিভিক ভলান্টিয়ারের মতো সিভিক শিক্ষক বা ভলান্টিয়ার শিক্ষক হবেন না। তাঁদের অর্জিত এবং পুরোনো পদ ও স্বীকৃতি ফিরিয়ে দিতেই হবে। অনেকে আবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পুনরায় যোগ্যতা যাচাইয়ের পরীক্ষায় বসতেও রাজি নন।
এই প্রেক্ষাপটে বুধবার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ডিআই অফিস ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন চাকরিহারা 'যোগ্য' প্রার্থীরা। তাঁরা এদিন জেলায় জেলায় ডিআই অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাবেন। তাঁদের সাফ কথা - প্রতিশ্রুতি শুনতে তাঁরা রাজি নন। তাঁদের মূল সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং সেটা দ্রুততার সঙ্গে করতে হবে। না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হবেন তাঁরা।
এদিকে, বুধবারের এই ঘোষিত কর্মসূচি ঘিরে জেলায় জেলায় উত্তেজনা ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহলের তরফে।