সবে শুরু হয়েছিল দাম্পত্য জীবন। কিন্তু মাত্র তিন মাসেই শেষ হয়ে গেল দাম্পত্য জীবন। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। আর এই সম্পর্কের টানাপোড়েনই যেন শেষ পর্যন্ত কেড়ে নিল এক তরতাজা যুবকের প্রাণ। এমনটা যে হবে তা কেউ কল্পনাও করেননি। সদ্য বিবাহিত দম্পতি সুখের সাগরে ভাসবে সেটাই দস্তুর। কিন্তু সেটা ঘটেনি। বরং বেসুরো সুর বেজে ওঠে তাঁদের জীবনে। ঠাকুরনগরের বাসিন্দা অমিত চট্টোপাধ্যায় (২৪) ভিডিয়ে কল করে স্ত্রীর সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেছেন। তারপর আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন বলে অভিযোগ। আজ, সোমবার দুপুরে নিজের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে।
পরিবার সূত্রে খবর, তিন মাস আগে অমিত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় ২৯ বছর বয়সী এক যুবতীর সঙ্গে। ওই যুবতীর এটি ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। বয়সে বড় এবং ডিভোর্সি যুবতীকে বিয়ে করা নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে আপত্তিও জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি। আর বিয়ের পর থেকেই তাঁদের দাম্পত্যে অশান্তি নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছিল। অমিতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, স্ত্রীর মোবাইলে বারবার অচেনা পুরুষের মেসেজ আসতো। যা নিয়ে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। অমিতের প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারত না স্ত্রী। তাই স্ত্রী প্রতি সন্দেহ গভীর হয়। কদিন আগে সেই অশান্তির জেরে স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।
আরও পড়ুন: রাতের অন্ধকারে শুটআউট মালদায়, কারা হামলা চালাল? যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক
স্থানীয় সূত্রে খবর, স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনায় মানসিকভাবে চূড়ান্ত ভেঙে পড়েন অমিত চট্টোপাধ্যায়। আর ওই ঘটনার দিন ইনস্টাগ্রামে স্ত্রীর সঙ্গে মাত্র পাঁচ মিনিটের একটি ভিডিয়ো কল করে কথাও বলেন অমিত। ওই কথোপকথনের পরই একটি ভিডিয়ো রেকর্ড করে স্ত্রীকে পাঠান যুবক অমিত। তারপরই চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে আত্মহত্যা করেন। ওই ঘটনার কিছু পরেই স্ত্রীর পক্ষ থেকে ফোন আসে অমিতের মোবাইলে। অমিতের দিদির দাবি, ওই ফোনে বলা হয় অমিত ‘কিছু একটা বড় ভুল’ করতে চলেছে। আর তখনই দিদি ঘরে গিয়ে দেখেন ভাইয়ের ঝুলন্ত দেহ।
পুলিশ সূত্রে খবর, অমিতের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে স্ত্রীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগও উল্লেখ রয়েছে। তবে ওই পাঁচ মিনিটের কথোপকথনে এমন কী ঘটেছিল? কেন আত্মহত্যা করলেন অমিত? স্ত্রীর কার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল? সেটা কি জেনে ফেলেছিলেন অমিত? দাম্পত্য কলহ নাকি মানসিক অবসাদ কোন গভীর কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনা? উত্তর খুঁজছে পুলিশ।