দিল্লিতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আটক করে তাদের সীমান্তের ওপারে ফেরত পাঠানোর কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এই আবহে রাজধানী দিল্লিতে শিশু ও নারীসহ আরও ৩৮ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে আটক করা হয়েছে। দিল্লিতে বসতি স্থাপনের আগে এই বাংলাদেশিরা হরিয়ানার নুহ এবং বিহারে থাকত বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু সেখানে বেশিদিন থাকতে পারেনি তারা। তারপর তারা দিল্লিতে এসেছিল বলে জানা গিয়েছে। (আরও পড়ুন: দেশে নেই ইউনুস, 'অ্যাকশন মোডে' বাংলাদেশ সেনা, আটক হাসনাতদের দলের দামাল নেতা)
আরও পড়ুন: মুসলিম দেশে বসে ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রশংসায় কংগ্রেসের সলমন খুরশিদ!
আধিকারিকদের মতে, ধৃত অভিযুক্তরা আগে হরিয়ানার নুহ এবং পরে বিহারে গিয়েছিল। পরে তাঁরা দিল্লি পৌঁছান। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাংলাদেশি নাগরিকরা বিহারে বসতি স্থাপনের চেষ্টা করলেও সেখানে জীবিকার ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হন। তারপরে তারা দিল্লিতে চলে যান। সেখানে তারা কারখানায় কাজ শুরু করেন এবং অবৈধ বসতিতে বসবাস শুরু করেন।
ধৃত বাংলাদেশিদেরদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। তারা সবাই অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী। তাদের কারও কাছেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। এর আগে বৃহস্পতিবার পূর্ব জেলা পুলিশ পাঁচ বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছিল। তাদের মধ্যে আবার তিনজন নাবালক ছিল। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত বছরের ১৯ নভেম্বর দিল্লি পুলিশ অভিযান শুরু করেছিল। এ পর্যন্ত শতাধিক বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। অনেককে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই ব্যক্তিদের গ্রেফতারের ফলে এমন অনেক নেটওয়ার্কও প্রকাশিত হয়েছে যা অনুপ্রবেশকারীদের জাল আধার সহ অনেক ধরণের নথি দেয়। পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলা এবং অপারেশন সিঁদুরের মধ্যে অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্তকরণ তীব্র হয়েছে। (আরও পড়ুন: 'সুনামি তুলতে পারে ভারতীয় নৌসেনা', মাসুদ-হাফিজদের চেয়ে পাককে হুঁশিয়ারি রাজনাথের)
এর আগে সম্প্রতি ভারতীয় সীমান্তে পুশব্যাক নিয়ে কাকুতি মিনতি করতে শোনা গিয়েছিল বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে। উল্লেখ্য, বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ থেকে কয়েক লাখ মানুষ চোরা পথে ভারতে অনুপ্রবেশ করে এখানেই বসবাস করছে। দিল্লি থেকে বেঙ্গালুরু বিভিন্ন জায়গায় এই সব বাংলাদেশিরা কাজ করে। এরপর বিভিন্ন উপায়ে বাংলাদেশের বাড়িতে টাকাও পাঠায় তারা। অনেকেই ইদের সময় চোরা পথে বাংলাদেশে গিয়ে কয়েকদিন করে কাটিয়েও আসে। এদের অনেকেই এখানে বিয়ে করেছেন। এই ধরনের অবৈধবাসীদের সম্প্রতি বাংলাদেশে 'পুশ ব্যাক' করছে ভারত। আর তাতেই আপত্তি বাংলাদেশের।
এই আবহে পুশব্যাক নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মহম্মদ নাজিম-উদ-দৌলা আবার সম্প্রতি বলেছিলেন, 'পুশ-ইন আমরা লক্ষ্য করছি। এটা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। এমনটা হতে থাকবে আর আমরা বসে থাকব, এটা ভাবারও কোনও কারণ নেই। বিজিবি এটা নিয়ে নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছে এবং সরকারও এ বিষয়ে অবগত। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন আছে এমনটা মনে হলে সরকারের নির্দেশে অবশ্যই সেনাবাহিনী সেটাতে যাবে।' রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ৪ মে থেকে কয়েক সপ্তাহে ভারত থেকে কয়েকশো বাংলাদেশিকে পুশ ব্যাক করা হয়েছে। এই আবহে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী জানান, পুশ ব্যাক বন্ধ করার দাবিতে ভারতকে নাকি চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশি কেউ ভারতে থেকে থাকলে তাঁকে সঠিক চ্যানেলে দেশে ফেরত পাঠাতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে যে ভারতীয়রা আছে, তাদের কিন্তু আমরা সঠিক চ্যানেলে পাঠিয়ে থাকি। আমরা কাউকে পুশব্যাক করি না।'